বগুড়ায় গরুর চামড়ার সাথে ছাগলের চামড়া ফ্রি!
বগুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে গরুর একটি চামড়া কিনলে সঙ্গে একটি খাসির চামড়া ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। তারপরও চামড়া বিক্রি করতে ঘুরতে হচ্ছে মৌসুমি ব্যবসায়ীদেরকে । তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে চামড়া কম দামে কিনলেও তা বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। গত কয়েক বছর ধরে চামড়ার বাজার নিম্নমুখী হওয়ার কারণে কোরবানি দেয়ার পর গরু ছাগলের চামড়া সস্তা দরেই বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে গরুর চামড়া ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। ছাগল ভেড়ার চামড়া ফ্রি দেয়া হলেও অনেক এলাকায় বিক্রি হয়েছে ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। গত কয়েক বছর ধরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গ্রামাঞ্চল থেকে চামড়া কিনে লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাও খোয়া গেছে অনেকের। এ কারণে এবার তারা সতর্কতার সঙ্গে চামড়া কিনছে। বগুড়া সদরের আকাশ তারা গ্রামের আকতারুজ্জামান বলেন, তাদের এক লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০০ টাকা।
গাবতলী উপজেলার মড়িয়া গ্রামের চামড়া ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গত কয়েক বছরে চামড়া ব্যবসার বকেয়া ২৮ লাখ টাকা এখনও তুলতে পারেননি। এ কারণে এবার সতর্কতার সাথে চামড়া কিনছেন।
তিনি বলেন, ফড়িয়ারা একটি গরুর চামড়ার সঙ্গে একটি ছাগলের চামড়া ফ্রি দিচ্ছেন। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যে প্রতিটি গরুর চামড়া কিনছেন তিনি।
গাবতলী উপজেলার গুড়টোপ নগর গ্রামের বাসিন্দা আজিজার রহমান ও মজিদ মাস্টার বলেন, তাদের সামের (সমাজ) ৭টি গরু, ২৪টি ছাগল ও ৩ টি ভেড়ার চামড়া ফড়িয়ারা ৩০০০ টাকা দাম করেছে। দাম একেবারেই কম হওয়ায় সেগুলো ভ্যান যোগে শহরে নিয়ে যাচ্ছেন বেশী দামের আশায়।
মৌসুমি চামড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, কয়েক হাত বদলের পর চামড়া শহরে আড়তে বিক্রি হবে। গত বছর তাদের অনেকেই আসল টাকা তুলেতে পারেননি। এ কারণে তারা ঝুঁকি নিচ্ছেন না।
এদিকে শহরে আড়তগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যেকেই ঢাকায় ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া টাকা তুলতে পারছেন না বছরের পর বছর ধরে। এ কারণে তারাও এবার বাকিতে চামড়া সরবরাহ করবেন না। প্রয়োজনে লবন দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে রাখবেন। এ কারণে তারাও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অধিক দামে চামড়া না কেনার পরামর্শ দিয়েছেন।